1. live@media71bd.com : Media71 : Media71
  2. info@www.media71bd.com : Media 71 :
শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ১২:৫০ অপরাহ্ন

আল-জাজিরার দাবি: ছাত্র বিক্ষোভ দমনে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র’ ব্যবহারে শেখ হাসিনার নির্দেশ

ডেস্ক নিউজ
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০২৫

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিট (আই-ইউনিট) দাবি করেছে, বাংলাদেশে ছাত্র বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনীকে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র’ ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণমাধ্যমটির ভাষ্য, এ সংক্রান্ত একটি কথিত ফোনালাপ রেকর্ড তাদের হাতে এসেছে, যেখানে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, “যেখানে পাবে, সোজা গুলি করবে।”

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনা এক ফোনালাপে তার এক সহযোগীকে জানান, “আমার নির্দেশনা দেওয়া আছে। ওপেন নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি একদম। এখন লিথাল ওয়েপনস ব্যবহার করবে।” রিপোর্টে দাবি করা হয়, এই নির্দেশনার পরপরই দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অভিযান চালায়, যাতে প্রায় ১ হাজার ৪০০ জন নিহত ও ২০ হাজারের বেশি আহত হন।

ফোনালাপ বিশ্লেষণে আল-জাজিরা আন্তর্জাতিক অডিও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে ভয়েস ম্যাচিং করিয়ে এর সত্যতা নিশ্চিত করার দাবি করেছে। একাধিক রেকর্ডিংয়ে শেখ হাসিনাকে তৎকালীন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে হেলিকপ্টার থেকে অভিযান পরিচালনা নিয়ে কথা বলতে শোনা যায়। সেখানে তিনি বলেন, “যেখানে গ্যাদারিং দেখবে, সেখানে ওপরে থেকে… এখন ওপরে থেকে করা হচ্ছে, অলরেডি শুরু হয়ে গেছে কয়েকটা জায়গায়।”

যদিও নিরাপত্তা বাহিনী হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে, ঢাকার পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক শাবির শরিফ জানিয়েছেন, হাসপাতালের সামনেই হেলিকপ্টার থেকে গুলি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করা হয়। তিনি বলেন, আহতদের অনেকে অস্বাভাবিক গুলির ক্ষত নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন, যা চিকিৎসকদের বিস্মিত করেছে।

আল-জাজিরা আরও জানায়, এই ফোনালাপগুলো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হতে পারে। ২০২৫ সালের ১০ জুলাই শেখ হাসিনা ও তার দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ গঠন করা হয়েছে এবং বিচার কার্যক্রম শুরু হতে পারে আগস্টে।

গণমাধ্যমটি আরও দাবি করেছে, এই ফোনালাপগুলো রেকর্ড করেছে শেখ হাসিনার সরকারের অধীন গোয়েন্দা সংস্থা এনটিএমসি। এ সংস্থার বিরুদ্ধে বিরোধী রাজনীতিক ও সরকারের মিত্রদের ওপর নজরদারির অভিযোগও রয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম আল-জাজিরাকে বলেন, “শেখ হাসিনা জানতেন তার ফোনালাপ রেকর্ড করা হচ্ছে। তিনি নিজেই বলেছেন, ‘আমি জানি, জানি, সমস্যা নেই।’”

রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। এই মৃত্যু দেশজুড়ে ছাত্র আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে। পরে শেখ হাসিনার সহযোগী সালমান এফ রহমান পুলিশ মহাপরিদর্শকের সঙ্গে আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দ্রুত শেষ করার বিষয়ে কথা বলেন।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক রাজিবুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তাকে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পরিবর্তনের জন্য একাধিকবার চাপ দেওয়া হয়—যাতে গুলির পরিবর্তে ইটের আঘাতে মৃত্যু দেখানো হয়। তবে আল-জাজিরার দাবি, রেকর্ডিংগুলোতে কোনো সম্পাদনা বা বিকৃতি করা হয়নি।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের একজন মুখপাত্র বলেন, “শেখ হাসিনা কখনোই প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেননি। এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি প্রচার।”

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট
error: Content is protected !!