1. live@media71bd.com : Media71 : Media71
  2. info@www.media71bd.com : Media 71 :
রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:৪৭ অপরাহ্ন

যশোরে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দিবসে বিজয় র‍্যালি

মোঃ ওবাইদুল হক, যশোর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট, ২০২৫

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগানিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বসেছেন, জ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার এক বছর পূর্ণ হয়েছে এখন উৎসব করার সময় নয়, এখন সময় সায়িত্ব পালনের। আওয়ামী লীগ যে দুঃশাসন উপহায় দিয়েছিল, সেখান থেকে আমরা দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাই। জনগণকে সম্পৃক্ত করে তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই। কারণ এই বাংলাদেশ কোনো একক রাজনৈতিক দলের নয়। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বে বিশ্বাদী সকল মানুষের। তাই সবনাকে সঙ্গে নিয়ে আমরা নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়য়ে চাই। ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে যশোর জেলা বিএনপি আয়োজিত বিজয় র্যালি পূর্ব সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। টাউন হল মাঠে অনুষ্ঠিত র্যালি পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম। সমাবেশ শেষে অধ্যাপক নার্গিস বেগম এবং অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের নেতৃত্বে হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে বিশাল একটি বিজয় র‍্যালি বের হয়। র্যালিটি দড়াটানা মোড়, চিত্রা মোড়, চৌরাস্তা আর এন রোড হয়ে মনিহারে গিয়ে শেষ হয়।

অনিন্দ্য ইসলাম অমিত আরও বলেন, কী কারণে লড়াই করেছি, সেই লড়াই করতে গিয়ে হাজার হাজার সহযোদ্ধা হারিয়েছি এটি যেন কেউ ভুলে না যাই। দেশবাসীর প্রতি দায়বদ্ধ থেকে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য ফ্যাসিস্টের নির্যাতন নিপীড়ন সহ্য করে দীর্ঘ ১৬ বছর রাজপথ আঁকড়ে ছিলাম। পুলিশ, র‍্যাব, কিংবা আওয়ামী লীগের গুন্ডা বাহিনীর রক্তচক্ষু আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারেনি। সেই আন্দোলন করতে গিয়ে বারংবার মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে কারাগারে যেতে হয়েছে তারপরও আমাদের একজন সহযোদ্ধাও রাজপথ ছেড়ে যায়নি। যে আদর্শ শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং আমাদের অভিভাবক তরিকুল ইসলাম আমাদের হৃদয়ে গ্রথিত করেছিলেন, সেই আদর্শ ধারণ করে প্রতি মুহূর্ত লড়াই করেছি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। আমরা জানতাম শেখ হাসিনা যতই দাপটশালী হোক না কেন একদিন তার পতন হবে। আমরা সেই বিশ্বাসের জায়গায় অবিচল ছিলাম বলেই প্রতিটি লড়াই সংগ্রামে সমগ্র দেশের মতো যশোরবাসীও আমাদের অকুন্ঠ সমর্থন দিয়েছিল। তিনি বলেন, রাষ্ট্র মেরামতে তারেক রহমানের ৩১ দফা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে। জনগণকে বোঝাতে হবে দেশের নারী, পুরুষ, ছাত্র, কৃষক, শ্রমিকদের জন্য বিএনপি কী করতে চায়।

তিনি বলেন, আমাদের লড়াই ছিল মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনার। মানুষের ভোটাধিকার, মানবাধিকার সমুন্নত রাখার, আইনের শাসন নিশ্চিত করার, বৈষম্যহীন সমাজ ও দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র, সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাঙ্গণ নিশ্চিত করার। সেই লড়াই আমরা একা শুরু করেছিলাম। পরবর্তীতে তারেক রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়েছিল ৪৪টি রাজনৈতিক দলসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। তার ফলশ্রুতিতে গণঅভ্যুত্থান রচিত হয়েছিল, কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে উসিলা করে সেই গণঅভ্যুত্থান চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করেছিল, সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ এক হয়েছিল বলেই।

অনিন্দ্য ইসলাম অমিত দলীয় নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যে ধরনের অপকর্ম বিগত ১৬ বছর আওয়ামী লীগ করেছে, সেই ধরনের অপকর্ম বিএনপি পরিবারের কাউকে করতে দেওয়া হবে না। আর কেউ যদি ওই ধরনের অপকর্ম করার চেষ্টা করে, সে যত বড় নেতাই হোক না কেন কিংবা ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে তার যত বড় ভূমিকাই থাকুক না কেন, দল তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে কুণ্ঠাবোধ করবে না। কারণ ব্যক্তির চেয়ে দল, দলের চেয়ে দেশ বড় এই মূলমন্ত্রে বিএনপি বিশ্বাস করে। যারা ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে আমাদের সহযোদ্ধা ছিল, সে যদি জনগণের প্রতিপক্ষ হয় তার জায়গা বিএনপিতে হবে না। আর ওই অপকর্মকারীদের যে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেবে তার জায়গাও বিএনপিতে হবে না।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড, সৈয়দ সাবিরুল হক সাবু। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকন, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হক সেতু, অভয়নগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফারাজী মতিয়ার রহমান, শার্শা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হাসান জহির, কেশবপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুস সামাদ বিশ্বাস, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব আনসারুল হক রানা, জেলা মহিলা দলের সভাপতি রাশিদা রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মোস্তফা আমির ফয়সাল প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম।

এর আগে ৫ আগস্ট (মঙ্গলবার) সকাল ১১টায় যশোর নগর এবং সদর উপজেলা বিএনপির আয়োজনে টাউন হল মাঠে বিজয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম মুল্লুক চাঁদ সভাপতিত্ব করেন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, নগর মহিলা দলের সভাপতি শামসুন্নাহার পান্না, যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম রবি, তানভীর রায়হান তুহিন, ছাত্রদল নেতা মাসুদ কায়সার ইসতি, পিকুল হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রাজু আহমেদ, মোস্তফা তরফদার রয়েল প্রমুখ। সমাবেশ শেষে টাউন মাঠ থেকে বিজয় র‍্যালি বের হয়। র‍্যালিটি দড়াটানা মোড়, চুয়াডাঙ্গা বাস স্ট্যান্ড হয়ে পালবাড়ী মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সন্ধ্যায় জিয়া স্মৃতি পাঠাগার যশোরের আয়োজনে চিত্রামোড়ে বিজয় কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট
error: Content is protected !!