জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ‘জুলাই’ আন্দোলন কুক্ষিগত করেছে এবং তারাই জাতীয় ঐক্য নষ্ট করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখ্য আহ্বায়ক শরীফ ওসমান হাদি।
শনিবার (২৪ মে) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ উত্থাপন করেন।
হাদি বলেন, “এনসিপির অনেক নেতাই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। যার শরীরে আঘাতের চিহ্ন, মাত্র ১০ মাসে সে কীভাবে কোটি টাকার মালিক হলো? তারা ইচ্ছেমতো পোস্ট দেয়, আবার ২ মিনিটের মধ্যে ডিলিট করে—এটি দায়িত্বশীলতার পরিচায়ক নয়। বিবেকের মধ্যে থাকুন, বিবেককে কখনো বর্গা দেবেন না।”
তিনি বলেন, “আমরা এখন এক গভীর সংকটে রয়েছি। রাষ্ট্রের কোনো সঠিক তথ্য নেই। দেশের রাজনৈতিক দলগুলো অনেক কিছু জেনেও প্রকাশ করছে না। অথচ এর আগেও অনেক আন্দোলন হয়েছে, তখন ড. মুহাম্মদ ইউনূস কখনো পদত্যাগের কথা বলেননি।”
সেনাবাহিনী প্রধানের বক্তব্য প্রসঙ্গে হাদি বলেন, “সেনাবাহিনী প্রধানের সাম্প্রতিক বক্তব্য পুরোপুরি রাজনৈতিক। এখনকার সরকার ও সেনাবাহিনী মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। বিগত সরকারের গুম-খুনের ঘটনা সম্পর্কে সবার জানা থাকলেও তখন কেউ কিছু বলেনি। তবে আমরা ‘জুলাই’-এর অংশীদারিত্ব অস্বীকার করছি না।”
ড. ইউনূস ও উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে তিনি বলেন, “ড. ইউনূসকে ব্যবহার করে অনেক উপদেষ্টা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। সরকারের দায়িত্ব ছিল—জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার, মৌলিক সংস্কার, সাংবিধানিক সংস্কার, নির্বাচন সংস্কার এবং অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করা। এর বাইরে অন্য কোনো কাজ ড. ইউনূস কেন করবেন?”
বিএনপিকে উদ্দেশ করে শরীফ ওসমান হাদি বলেন, “দিল্লির ছকে পা দিয়ে দেশ যদি ক্ষমতা হারায়, এর দায় রাজনৈতিক দলগুলোর। বিএনপি এখন পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে যুক্তিসঙ্গত কথাই বলেছে, কিন্তু তারা বোঝে না—সেনাবাহিনীর একটি অংশ ক্ষমতায় যেতে চায়। বিএনপির উচিত ছিল ‘জুলাই আন্দোলন’-এর ঘোষণাপত্রকে গ্রহণ করা। কিন্তু তারা শুধু নির্বাচনের কথা বলে, কারণ তারা দিল্লির প্রভাব মেনে চলছে।”
ছাত্র উপদেষ্টাদের বিষয়ে বিএনপির অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপি তাদের বিরুদ্ধে নানা কথা বলে, অথচ তাদের দলে এমন একজন উপদেষ্টা আছেন যিনি স্যুটকেস গুছিয়ে বসে আছেন—ড. ইউনূস ক্ষমতা ছাড়লেই যেন তিনি প্রধান উপদেষ্টা হতে পারেন।”
শেষে প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “ড. ইউনূস, আপনি ইচ্ছে করলেই পদত্যাগ করতে পারবেন না। যাঁরা আপনাকে বসিয়েছেন, তাঁরাই বলবেন কখন যেতে হবে। সবাইকে আহ্বান জানাই—ড. ইউনূসের হাতকে শক্তিশালী করুন এবং অতি-চতুর উপদেষ্টাদের দপ্তরবিহীন করুন।”