প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যেই পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা জানান। স্বাধীনতা দিবস ও ঈদুল ফিতর সামনে রেখে দেওয়া তার এ ভাষণ রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে একযোগে প্রচারিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা চাই, আগামী নির্বাচনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হোক। এজন্য নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোও উৎসাহের সঙ্গে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে বলে আশা করছি।”
তিনি আরও জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের কাজ শুরু করেছে এবং ৬টি সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশসহ পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু হয়েছে এবং দলগুলো সংস্কার প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ঐকমত্য কমিশনের কাজ চলছে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত গ্রহণ করা হচ্ছে। কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে “যেসব বিষয়ে দলগুলো একমত হবে, সেগুলোর তালিকা তৈরি করা এবং স্বাক্ষর সংগ্রহ করা। এই তালিকাটিই হবে ‘জুলাই চার্টার’ বা ‘জুলাই সনদ’। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে পুরো প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করা এবং শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের আয়োজন করা।”
প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে জানান, তিনি ইলন মাস্কের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং বাংলাদেশে স্টারলিংকের কার্যক্রম শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন। এর ফলে কোম্পানির প্রতিনিধিরা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং “আগামী তিন মাসের মধ্যে বাণিজ্যিক চুক্তি চূড়ান্ত হবে” বলে তিনি জানান। স্টারলিংকের মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে উচ্চগতির ইন্টারনেট বাংলাদেশে ডিজিটাল বিপ্লব ঘটাবে।
প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “পতিত স্বৈরাচারের নিপীড়নের বর্ণনা উঠে এসেছে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে। কীভাবে একজন প্রধানমন্ত্রী নিজ দেশের নিরস্ত্র মানুষকে হত্যার পর লাশ লুকানোর নির্দেশ দিয়েছেন—তা দেখে গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায়।”
তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, “যারা গণহত্যায় জড়িত ছিল, যারা নিরীহ মানুষ হত্যা করেছে এবং বিশ্বে হত্যাকারী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, তাদের বিচার এই দেশের মাটিতেই হবে।”