বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের শুল্ক কাঠামো পুনর্বিবেচনা করতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করার পর, সরকার এ বিষয়ে পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) এক ফেসবুক পোস্টে প্রেস সচিব এ তথ্য জানান। তিনি লিখেছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) শুল্ক যৌক্তিকীকরণের জন্য সম্ভাব্য বিকল্পগুলো খুঁজে বের করবে, যা কার্যকর সমাধানের জন্য জরুরি।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার। ট্রাম্প প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বাড়াতে কাজ করছে। চলমান আলোচনার মাধ্যমে শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়টি সমাধান হবে বলে আশাবাদী সরকার।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে সব আমদানির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া, বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদারসহ বেশ কিছু দেশের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
বুধবার (২ এপ্রিল) ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় (বাংলাদেশ সময় বুধবার দিবাগত রাত ২টা) হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন শুল্ক ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
ঘোষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশ করা হয়েছে, যেখানে এতদিন গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল। ফলে নতুন শুল্কের কারণে শুল্কহার দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮৪০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যার মধ্যে তৈরি পোশাকের পরিমাণ ৭৩৪ কোটি ডলার।
নতুন সম্পূরক শুল্ক আরোপের ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত বড় ধাক্কা খেতে পারে, বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, শুল্ক কাঠামো আধুনিকীকরণ এবং বৈদেশিক বাণিজ্য নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে এই পর্যালোচনা করা হচ্ছে। বিশেষ করে কৃষি, শিল্পখাত ও ভোক্তাপণ্যের শুল্ক কমানো বা পুনর্বিন্যাসের বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে।
বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং রপ্তানি বাড়াতেই বাংলাদেশ এই পদক্ষেপ নিতে পারে। এছাড়া, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা জোরদার করতে উভয় দেশের মধ্যে বিভিন্ন চুক্তি ও আলোচনা চলমান রয়েছে।